When Lata raised funds for 1983 WC winners
সাম্যজিৎ ঘোষ, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: প্রয়াত কোকিল কন্ঠী লতা মঙ্গেশকর। রবিবারই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ভারতরত্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর । ৯২ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। লতার প্রয়াণে দেশে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ক্রীড়া জগতের একাধিক তারকারা লতাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছে তিনি ‘লতা দিদি’ নামেই পরিচিত। ক্রিকেটের বড় ভক্ত ছিলেন লতা। ক্রিকেট সম্পর্কে জ্ঞানও ছিল অনেক। ভারতীয় দলের জয় উদযাপন করতে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে লতা মঙ্গেশকরের একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল।
ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছে তিনি ‘লতা দিদি’ When Lata raised funds for 1983 WC winners
লতা মঙ্গেশকর এই কনসার্টের জন্য বোর্ডের থেকে কোনও টাকা নেননি। লতা দিদি যখন মঞ্চে এই গানটি গাইছিলেন, তখন তাঁর কণ্ঠে গাইছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। এই কনসার্ট প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আয় করেছিল। সেই টাকা থেকে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সমস্ত সদস্যকে পুরষ্কার হিসাবে ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় বোর্ড এবং তৎকালীন খেলোয়াড়রা লতা মঙ্গেশকরের এই অবদানকে সর্বদা মনে রেখেছে। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে লতাজি বেঁচে থাকা পর্যন্ত ভারতের প্রতিটি স্টেডিয়ামে ম্যাচ দেখার জন্য একটি আসন সংরক্ষিত থাকবে।

১৯৮৩ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের পর লতা পুরস্কার দিয়েছিলেন দলকে When Lata raised funds for 1983 WC winners
কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারতীয় দল প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল। সেই সময়ে ভারতীয় বোর্ড -এর কাছে খেলোয়াড় এবং তার সাপোর্ট স্টাফদের কর্মীদের দেওয়ার মতো অর্থ ছিল না। তৎকালীন বোর্ড সভাপতি এনকেপি সালভে তার বিজয়ী দলের খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অর্থের অভাবে তিনি তা করতে পারেননি।তিনি প্রায়শই তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ভারতের ম্যাচ সম্পর্কিত খবর পোস্ট করতেন। ১৯৮৩ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের পর লতা পুরস্কার দিয়েছিলেন দলকে। অনেকেই হয়তো সেই সম্পর্কে অবগত নন। কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারতীয় দল প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল। সেই সময়ে ভারতীয় বোর্ড -এর কাছে খেলোয়াড় এবং তার সাপোর্ট স্টাফদের কর্মীদের দেওয়ার মতো অর্থ ছিল না। তৎকালীন বোর্ড সভাপতি এনকেপি সালভে তার বিজয়ী দলের খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অর্থের অভাবে তিনি তা করতে পারেননি।
ক্রিকেট দলকে বাড়িতে আপ্যায়ন করতেন
খেলাধুলার ভক্ত ছিলেন। সময়, সুযোগ পেলেই স্টেডিয়ামে হাজির হতেন। টিভির পর্দায়ও অনবরত চোখ রাখতেন। একটা সময় মুম্বইয়ে কোনও ম্যাচ থাকলেই ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নিজের বাড়িতে আপ্যায়ন করতেন। পরের দিকে অসুস্থতার জন্য সেটা আর সম্ভব হতো না। কিন্তু প্রিয় খেলার সঙ্গে সম্পর্ক কোনওদিন ছেদ হয়নি।
মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসরের খবরে আঘাত পেয়েছিলেন
মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসরের খবরে আঘাত পেয়েছিলেন। ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘ধোনি, তোমাকে দেশের এখনও প্রয়োজন আছে।’২০১৯ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ভারত ছিটকে যাওয়ার পর যখন চারিদিকে সমালোচনার ঝড় বইছিল, ভারতীয় দলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। তাঁর প্রয়াণে সবচেয়ে বড় সমর্থককে হারাল ভারতীয় ক্রিকেট।
ভাল বন্ধুত্ব ছিলেন ক্রিকেট কর্তা, প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি রাজ সিং দুঙ্গারপুরের সঙ্গে। ১৯৮৩ সালে কপিল দেবদের বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য বোর্ডের কোষাগারে অত টাকা ছিল না। তখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন জগমোহন ডালমিয়া। রাজ সিং দুঙ্গারপর ডালমিয়াকে নিয়ে লতা মঙ্গেশকরের দারস্থ হয়েছিলেন। তাঁকে অনুরোধ করা হয় একটি কনসার্ট করার জন্য। সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী। মুম্বইয়ে সেই অনুষ্ঠান হয়েছিল। প্রচুর টাকা উঠেছিল। সেই কনসার্ট থেকে সংগৃহিত অর্থে ভারতীয় দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারকে একটি করে সোনার চেন উপহার দেওয়া হয়েছিল। শুধু ক্রিকেটকে ভালবাসতেনই না, প্রয়োজনের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর।
When Lata raised funds for 1983 WC winners
Published by Samyajit Ghosh